Sunday, September 9, 2018

স্বামী - স্ত্রীর মনোমালিন্য হলে করণীয় কি?

স্বামী - স্ত্রীর মনোমালিন্য হলে করণীয় কি? 




মনোমালিন্য

‘‘সংসার সাগরে দুঃখ-তরঙ্গের খেলা,

আশা তার একমাত্র ভেলা।’’

কিন্তু সেই ভেলা ডুবে গেলে আর কার কি সাধ্য? স্বামী যদি স্ত্রীকে না চায়। তার কোন ত্রুটির কারণে তাকে উপেক্ষা করে, তবে স্ত্রী চাইলেও কি করতে পারে? মহান আল্লাহ তার সমাধান দিয়েছেনঃ-

‘‘স্ত্রী যদি তার স্বামীর দুর্ব্যবহার ও উপেক্ষার আশঙ্কা করে, তবে তারা আপোস-নিষ্পত্তি করতে চাইলে তাদের কোন দোষ নেই। বস্ত্ততঃ আপোস করা অতি উত্তম।[1]

স্ত্রী নিজের কিছু অধিকার বিসর্জন দিয়ে

সন্ধির মাধ্যমে স্বামীর সংসর্গ গ্রহণ করাই একমাত্র পথ।

কিন্তু স্ত্রী স্বামীকে উপেক্ষা করতে চাইলে এবং স্বামী তাকে প্রাণ দিয়ে চাইলে তার সমাধান কি? স্ত্রীর এই উপেক্ষা যদি সংগত কারণে হয়; অর্থাৎ স্বামীর ভরণ-পোষণ বা সঙ্গমের অযোগ্যতা যথার্থভাবে প্রমাণিত হয় অথবা আরোপিত শর্তাদি পালন না করে থাকে, তাহলে এ বিষয়ে আল্লাহ বলেন,

﴿إِلاَّ أَنْ يَخَافَا أَلاَّ يُقِيمَا حُدُودَ اللهِ فَإِنْ خِفْتُمْ أَلاَّ يُقِيمَا حُدُودَ اللهِ فَلاَ جُنَاحَ عَلَيْهِمَا فِيمَا افْتَدَتْ بِهِ تِلْكَ حُدُودُ اللهِ فَلا تَعْتَدُوهَا وَمَنْ يَتَعَدَّ حُدُودَ اللَّهِ فَأُولَئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ﴾

‘‘তবে যদি তাদের উভয়ের আশংকা হয় যে, তারা আল্লাহর সীমারেখা রক্ষা করে চলতে পারবে না এবং তোমরা যদি আশংকা কর যে, তারা আল্লাহর সীমারেখা (বাস্তবিকই) রক্ষা করে চলতে সক্ষম নয়। তবে সে অবস্থায় স্ত্রী কোন কিছুর বিনিময়ে (মোহর ফেরৎ বা অতিরিক্ত কিছু অর্থদন্ড দিয়ে) ( স্বামী থেকে) নিষ্কৃতি পেতে চাইলে তাতে ( স্বামী-স্ত্রীর) কারো পাপ নেই। এ সব আল্লাহর গন্ডীসীমা। অতএব তোমরা তা লঙ্ঘন করো না, আর যারা আল্লাহর নির্ধারিত সীমা উল্লংঘন করে তারাই অত্যাচারী।’’[2]

সুতরাং স্বামী মোহর ফেরৎ নিয়ে স্ত্রীকে তালাক দেবে। না দিলে স্ত্রী কাজীর নিকট অভিযোগ করে ‘খোলা তালাক’ নিতে পারে।

পক্ষান্তরে স্ত্রী যদি অকারণে বা সামান্য ত্রুটির কারণে; যেমন পর্দায় থাকতে পারবে না বলে, স্বামী লজেন্স কিনে খাওয়ায় না বলে অথবা প্যান্ট পরে না বলে ‘খোলা’ চায় তবে তার উপর জান্নাতের সুগন্ধিও হারাম।[3]

প্রিয় নবী (সাঃ) বলেন,

الْمُخْتَلِعَاتُ وَالْمُنْتَزِعَاتُ هُنَّ الْمُنَافِقَاتُ.

‘‘খোলা তালাক প্রার্থিনী এবং বিবাহ বন্ধন ছিন্নকারিণীরা মুনাফিক মেয়ে।’’[4]

তালাক বৈধ হলেও তা কোন খেল-তামাশা নয়। পর্যাপ্ত কারণ বিনা তালাক দেওয়া বা নেওয়ার উপর জবাবদিহি করতে হবে সংশ্লিষ্ট সকল ব্যক্তিবর্গকে।

পক্ষান্তরে স্ত্রী একান্ত অবাধ্য হলে স্বামীর উচিৎ, প্রথমতঃ তাকে সদুপায়ে উপদেশ দেওয়া ও বুঝানো। আল্লাহ ও তাঁর আযাবের ভয় প্রদর্শন করা। তাতেও বিরত না হলে তার শয্যাত্যাগ করা। তবে কক্ষ ত্যাগ করা উচিৎ নয়। কিন্তু শয্যাত্যাগ করাকে যদি স্ত্রী ভালো মনে করে এবং তাতে কোন ফললাভ না হয়, তাহলে এরপর সে তাকে প্রহার করতে পারে। তবে চেহারায় নয় বা এমন প্রহার নয়; যাতে কেটে-ফুটে যায়।[5]

এতে যদি স্ত্রী স্বামীর অনুগতা হয়ে সোজা পথে এসে যায়, তাহলে আর অন্য কোন ভিন্নপথ অবলম্বন করা (তালাক দেওয়া) স্বামীর জন্য উচিৎ নয়।[6]

প্রকাশ যে, স্বামী-স্ত্রীর মাঝে প্রেম বা বিচ্ছেদ সৃষ্টি করতে কোন প্রকার যোগ-যাদু ইত্যাদি অভিচার ক্রিয়ার সাহায্য নেওয়া বৈধ নয়। কারণ যাদু এক প্রকার কুফরী।[7]

৪ মাস অপেক্ষা কম সময়ের জন্য স্বামী তার স্ত্রীর নিকট না যাওয়ার কসম খেয়ে সেই সময়ের ভিতরে স্ত্রী-মিলন চাইলে কসমের কাফ্ফারা আদায় করতে হবে। মেয়াদ পূর্ণ করলে কাফ্ফারা লাগবে না। পক্ষান্তরে ৪ মাসের অধিক সময়ের জন্য স্ত্রী-স্পর্শ না করার কসম খেলে কসমের কাফ্ফারা দিয়ে ৪ মাসের পূর্বেই স্ত্রীর নিকট যাওয়া জরুরী। নচেৎ ৪ মাস অতিবাহিত হয়ে গেলে স্ত্রীর তালাক হয়ে যাবে বা স্ত্রী কাজীর নিকট অভিযোগ করে স্বামীকে তার সংসর্গে আসতে অথবা তালাক দিতে বাধ্য করতে পারবে। মহান আল্লাহ বলেন,

{لِّلَّذِينَ يُؤْلُونَ مِن نِّسَآئِهِمْ تَرَبُّصُ أَرْبَعَةِ أَشْهُرٍ فَإِنْ فَآؤُوا فَإِنَّ اللهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ (226) وَإِنْ عَزَمُواْ الطَّلاَقَ فَإِنَّ اللهَ سَمِيعٌ عَلِيمٌ} (227) سورة البقرة

‘‘যারা নিজেদের স্ত্রীর কাছে না যাওয়ার শপথ (ঈলা) করে তারা চার মাস অপেক্ষা করবে; অতঃপর তারা যদি মিলে যায়, তবে নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। আর যদি তারা তালাকই দিতে সংকল্প করে, তবে আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।’’[8]

স্ত্রী পছন্দ না হলে যদি স্বামী তালাক দেয়, তবে প্রদত্ত মোহর সে ফেরৎ পাবে না। স্ত্রী ‘খোলা’ নিলে স্বামী মোহর ফেরৎ পাবে। সুতরাং এই মোহর বা অতিরিক্ত অর্থদন্ডের লোভে স্ত্রীর উপর নির্যাতন চালিয়ে তাকে ‘খোলা’ নিতে বাধ্য করা স্বামীর জন্য বৈধ নয়। এ ব্যাপারে মহান আল্লাহ বলেন,

﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لا يَحِلُّ لَكُمْ أَنْ تَرِثُوا النِّسَاءَ كَرْهاً وَلا تَعْضُلُوهُنَّ لِتَذْهَبُوا بِبَعْضِ مَا آتَيْتُمُوهُنَّ إِلَّا أَنْ يَأْتِينَ بِفَاحِشَةٍ مُبَيِّنَةٍ﴾

‘‘হে মুমিনগণ! জোর-জুলুম করে নারীদের ওয়ারেস হওয়া তোমাদের জন্য হালাল নয়। তোমরা তাদেরকে যা প্রদান করেছ, তার কিয়দংশ আত্মসাৎ করার (ফিরিয়ে নেবার) উদ্দেশ্যে তাদের উপর উৎপীড়ন করো না (বা আটক রেখো না); যদি না তারা প্রকাশ্য অশ্লীলতায় লিপ্ত হয়।’’[9]

তিনি আরো বলেন,

﴿وَإِنْ أَرَدْتُمُ اسْتِبْدَالَ زَوْجٍ مَكَانَ زَوْجٍ وَآتَيْتُمْ إِحْدَاهُنَّ قِنْطَاراً فَلا تَأْخُذُوا مِنْهُ شَيْئاً أَتَأْخُذُونَهُ بُهْتَاناً وَإِثْماً مُبِيناً﴾

‘‘আর যদি এক স্ত্রীর স্থলে অন্য স্ত্রী গ্রহণ করারই ইচ্ছা কর এবং তাদের একজনকে প্রচুর অর্থ দিয়ে থাক, তবুও তা থেকে কিছুই গ্রহণ করো না। তোমরা কি মিথ্যা অপবাদ ও প্রকাশ্য পাপাচরণ দ্বারা তা গ্রহণ করবে?’’[10]

স্বামীর এরূপ দুরভিসন্ধি বুঝা গেলে সে মোহর ফেরৎ পাবে না।[11]

স্বামীর জন্য বৈধ নয় যে, সে নিছক জব্দ করা ও কষ্ট দেওয়ার উদ্দেশ্যে স্ত্রীকে তালাক না দিয়ে লটকে রাখবে। আল্লাহর আদেশ,

﴿وَلا تُمْسِكُوهُنَّ ضِرَاراً لِتَعْتَدُوا وَمَنْ يَفْعَلْ ذَلِكَ فَقَدْ ظَلَمَ نَفْسَهُ وَلاَ تَتَّخِذُوا آيَاتِ اللهِ هُزُواً﴾

‘‘তাদের উপর নির্যাতন বা বাড়াবাড়ি করার উদ্দেশ্যে তাদেরকে আটকে রেখো না। যে ব্যক্তি এমন করে সে নিজেরই ক্ষতি করে। আর তোমরা আল্লাহর নির্দেশসমূহকে ঠাট্টা-তামাশার বস্ত্ত মনে করো না।--।’’[12]

বনিবনাও চরম স্পর্শকাতর পর্যায়ে পৌঁছে গেলে, প্রহারাদি করেও স্ত্রী স্বামীর অনুগতা না হলে আর এক উপায় আল্লাহ বলে দিয়েছেন,

﴿وَإِنْ خِفْتُمْ شِقَاقَ بَيْنِهِمَا فَابْعَثُوا حَكَماً مِنْ أَهْلِهِ وَحَكَماً مِنْ أَهْلِهَا إِنْ يُرِيدَا إِصْلاحاً يُوَفِّقِ اللهُ بَيْنَهُمَا﴾

‘‘যদি উভয়ের মধ্যে বিরোধ আশঙ্কা কর তবে তোমরা এর ( স্বামীর) পরিবার হতে একজন ও ওর (স্ত্রীর) পরিবার হতে একজন সালিস নিযুক্ত কর; যদি তারা উভয়ে নিষ্পত্তি চায় তবে আল্লাহ তাদের মধ্যে মীমাংসার অনুকূল অবস্থা সৃষ্টি করে দেবেন।’’[13]

এ উপায় ফলপ্রসূ না হলে তিক্তময় জীবন থেকে নিষ্কৃতি পেতে শেষ পন্থা হল তালাক। প্রিয় নবী (সাঃ) বলেন,

ثَلاَثَةٌ يَدعُونَ فَلاَ يُستَجَابُ لَهُم : رَجُلٌ كاَنَت تَحتَهُ امرَأَةٌ سَيِّئَة الخُلُق فَلَم يُطَلِّقهَا وَرَجُلٌ كَانَ لَه عَلى رَجُل مَالٌ فَلَم يَشهَد عَلَيه وَرَجُل آتى سَفيهاً مَالَهُ وَقَد قَالَ الله عَزَّ وَجَلَّ : { وَلاَ تُؤتُوا السُّفَهَاءَ أَمْوَالَكُم }.

‘‘তিন ব্যক্তি দুআ করে কিন্তু কবুল হয় না; যে তার অসৎ চরিত্রের স্ত্রীকে তালাক দেয় না। যে ঋণ দিয়ে সাক্ষী রাখে না এবং যে নির্বোধকে নিজের অর্থ প্রদান করে; অথচ আল্লাহ বলেছেন, ‘‘তোমরা নির্বোধদেরকে তোমাদের অর্থ প্রদান করো না।’’[14]

তালাক কোন বিধেয় কর্ম নয়, বরং বৈধ কর্ম। বড় হতভাগারাই তালাকের আশ্রয় নিয়ে থাকে। আসলে তালাক হল ইমারজেন্সী গেটের মতো। যখন চারিদিকে আগুন লাগে এবং সমস্ত গেট বন্ধ হয়ে যায়, তখন নিরুপায়ে ঐ গেট ব্যবহার না করলে জীবন বাঁচে না।

[1] (সূরা আন-নিসা (৪) : ১২৮) [2] (সূরা আল-বাক্বারা (২) : ২২৯) [3] (আবু দাঊদ, তিরমিযী, ইবনে হিববান , সহীহ আল-জা-মিউস সাগীর অযিয়াদাতুহ ২৭০৬নং) [4] (নাসাঈ, বাইহাকী, মুসনাদে আহমদ, আস-সিলসিলাতুস সহীহাহ ৬৩২নং) [5] (আবু দাঊদ) [6] (সূরা আন-নিসা (৪) : ৩৪) [7] (ফাতাওয়াল মারআতিল মুসলিমাহ ১/১৪৮) [8] (সূরা আল-বাক্বারা (২) : ২২৬-২২৭, ফিকহুস সুন্নাহ ২/১৭৮-১৭৯) [9] (সূরা আন-নিসা (৪) :১৯) [10] (সূরা আন-নিসা (৪) : ২০) [11] (ফিকহুস সুন্নাহ ২/২৬৮) [12] (সূরা আল-বাক্বারা (২) : ২৩১) [13] (সূরা আল-বাক্বারা (৪) : ৩৫) [14] (সূরা আন-নিসা (৪) : ২) (সহীহ আল-জা-মিউস সাগীর অযিয়াদাতুহ ৩০৭৫নং)

Tuesday, August 28, 2018

বইঃ ছহীহ হাদীছের কষ্টিপাথরে ঈদের তাকবীর ।


বইঃ ছহীহ হাদীছের কষ্টিপাথরে ঈদের তাকবীর ।
লেখকঃ মুযাফফার বিন মুহসিন ।


                                                            Download করুন

Sunday, August 26, 2018

বইঃ ভ্রান্ত আক্বীদা বনাম সঠিক আক্বীদা


বইঃ  ভ্রান্ত আক্বীদা বনাম সঠিক আক্বীদা
                                  লিখেছেনঃ  মুযাফফর বিন মুহসিন



সংক্ষিপ্ত বর্ণনা: মুসলিমদের জন্য অত্যন্ত জটিল যে বিষয়টি সেটি হল আক্বীদা। আমাদের মধ্যে এমন অনেক মুসলিম আছি যারা আক্বীদা বিষয়টির কিছুই বুঝিনা। অথচ মুসলিম হিসাবে আমাদের প্রত্যেকের এ বিষয়টি জানা অপরিহার্য। বইটিতে আক্বীদার প্রকৃত পরিচয় তুলে ধরা হয়েছে।

                                          বইটির PDF কপির Download Link দেয়া হলঃ
                                                 
                

Wednesday, August 22, 2018

ঈদে মিলাদুন্নবী শিয়াদের থেকে আমদানী করা হয়েছে। যা জঘন্য বেদআত


 
''ঈদে মিলাদুন্নবী''শিয়াদের থেকে আমদানী করা হয়েছে।
যা জঘন্য বেদআত

.
দুই ঈদের বাইরে কোনো দিনকে সামাজিকভাবে উদযাপন শুরু হয় হিজরী ৪র্থ শতাব্দীর মাঝামাঝি থেকে শিয়াদের উদ্যোগে।
সর্বপ্রথম ৩৫২ হিজরীতে (৯৬৩ খ্রি.) বাগদাদের আব্বাসী খলিফার প্রধান প্রশাসক ও রাষ্ট্রের প্রধান নিয়ন্ত্রক বনী বুয়াইহির শিয়া শাসক মুইজ্জুদ্দৌলা ১০ই মহররম আশুরাকে শোক দিবস ও জিলহজ্ব মাসের ৮ তারিখ গাদীর খুমদিবস ঈদ ও উৎসব দিবস হিসাবে পালন করার নির্দেশ দেন। তার নির্দেশে এই দুই দিবস সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় মর্যাদার সাথে পালন করা হয়। যদিও শুধুমাত্র শিয়ারাই এই দুই দিবস পালনে অংশগ্রহণ করেন, তবুও তা সামাজিকরূপ গ্রহণ করে। কারণ রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতার ফলে আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ প্রথম বছরে এই উদযাপনে বাধা দিতে পারেননি। পরবর্তী যুগে যতদিন শিয়াদের প্রতিপত্তি ছিল এই দুই দিবস উদযাপন করা হয়, যদিও তা মাঝে মাঝে শিয়া-সুন্নী ভয়ঙ্কর সংঘাত ও গৃহযুদ্ধের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
[
ইবন কাসির, আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া ৭/৬৪২,৬৫৩]

কুরবানী: ফযিলত ও আমল


কুরবানী: ফযিলত ও আমল


কুরবানী: ফযিলত ও আমল


إن الحمد لله والصلاة والسلام على رسول الله وعلى آله وصحبه أجمعين أما بعد
কুরবানী আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের পক্ষ থেকে এক  বিশেষ অনুগ্রহ। কেননা বান্দাহ কুরবানীর মাধ্যমে আল্লাহর নিকটবর্তী হতে পারে। কুরবান শব্দটি কুরবুন শব্দ থেকে উৎকলিত। অর্থাৎ নিকটবর্তী হওয়া, সান্নিধ্য লাভ করা। যেহেতু আল্লাহর নৈকট্য লাভ করার মাধ্যম হল কুরবানী তাই এর নাম কুরবানীর ঈদ। এই দিনে ঈদ পালন করা হয়ে থাকে এজন্য একে কুরবানীর ঈদ বলে। এ ঈদের অপর নাম ঈদুল আদ্বহা। আরবি শব্দ আদ্বহা অর্থ কুরবানীর পশু, যেহেতু এই দিনে কুরবানীর পশু যবেহ করা হয়, তাই একে ঈদুল আদ্বহা বলা হয়।

বইঃ হাদীসের নামে জালিয়াতি – প্রচলিত মিথ্যা হাদীস ও ভিত্তিহীন কথা


বইঃ হাদীসের নামে জালিয়াতি প্রচলিত মিথ্যা হাদীস ও ভিত্তিহীন কথা (ফ্রি ডাউনলোড)




বইঃ হাদীসের নামে জালিয়াতি প্রচলিত মিথ্যা হাদীস ও ভিত্তিহীন কথা (ফ্রি ডাউনলোড)

বইঃ হাদীসের নামে জালিয়াতি প্রচলিত মিথ্যা হাদীস ও ভিত্তিহীন কথা
লিখেছেনঃ ড. খোন্দকার আব্দুলাহ জাহাঙ্গীর
{পি-এইচ. ডি. (রিয়াদ), এম. এ. (রিয়াদ), এম.এম. (ঢাকা)
অধ্যাপক, আল-হাদীস বিভাগ,
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া}

সংক্ষিপ্ত বর্ণনাঃ কুরআন কারীমের পরে রাসূলুলাহ (সাঃ)-এর হাদীস ইসলামী জ্ঞানের দ্বিতীয় উৎস ও ইসলামী জীবন ব্যবস্থার দ্বিতীয় ভিত্তি। মুমিনের জীবন আবর্তিত হয় রাসূলুলাহ (সাঃ)-এর হাদীসকে কেন্দ্র করে। হাদীস ছাড়া কুরাআন বুঝা ও বাস্তাবায়ন করাও সম্ভব নয়। হাদীসের প্রতি এই স্বভাবজাত ভালবাসা ও নির্ভরতার সুযোগে অনেক জালিয়াত বিভিন প্রকারের বানোয়াট কথা হাদীস নামে সমাজে প্রচার করেছে। সকল যুগে আলিমগণ এসকল জাল ও বানোয়াট কথা নিরীক্ষার মাধ্যমে চিহ্নিত করে মুসলমানদেরকে সচেতন করেছেন।

আমাদের দেশে যুগ যুগ ধরে হাদীসের পঠন, পাঠন ও চর্চা থাকলেও সহীহ, যয়ীফ ও বানোয়াট হাদীসের বাছাইয়ের বিষয়ে বিশেষ অবহেলা পরিলক্ষিত হয়। যুগ যুগ ধরে অগণিত বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও মিথ্যা কথা হাদীস নামে আমাদের সমাজে প্রচারিত হয়েছে ও হচ্ছে। এতে আমরা রাসূলুলাহ (সাঃ)-এর নামে মিথ্যা বলার কঠিন পাপের মধ্যে নিপতিত হচ্ছি। এছাড়াও দুইভাবে আমরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি। প্রথমত, এ সকল বানোয়াট হাদীস আমাদেরকে সহীহ হাদীসের শিক্ষা, চর্চা ও আমল থেকে বিরত রাখছে। দ্বিতীয়ত, এগুলির উপর আমল করে আমরা আলাহর কাছে পুরস্কারের বদলে শাস্তি পাওনা করে নিচ্ছি।

এই পুস্তকের প্রথম পর্বে হাদীসের পরিচয়, হাদীসের নামে মিথ্যার বিধান, ইতিহাস, হাদীসের নির্ভুলতা নির্ণয়ে সাহাবীগণ ও পরবর্তী মুহাদ্দিসগণের নিরীক্ষা পদ্ধতি, নিরীক্ষার ফলাফল, মিথ্যার প্রকারভেদ, মিথ্যাবাদী রাবীগণের শ্রেণীভাগ, জাল হাদীস নির্ধারণের পদ্ধতি ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করা হয়েছে। আশা করি এই আলোচনা পাঠকের মনের দ্বিধা ও অস্পষ্টতা দূর করবে এবং হাদীসের নির্ভুলতা রক্ষায় মুসলিম উম্মাহর অলৌকিক বৈশিষ্ট্য পাঠকের কাছে স্পষ্ট হবে।

দ্বিতীয় পর্বে আমাদের সমাজে প্রচলিত বিভিনড়ব ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও জাল হাদীসের বিষয়ভিত্তিক আলোচনা করা হয়েছে। উল্লেখ্য যে, জাল হাদীসের বিষয়ে লেখকের মূলত নিজের কোনো মতামত উলেখ করা হয়নি। দ্বিতীয় হিজরীর তাবেয়ী ও তাবে- তাবেয়ী ইমামগণ থেকে শুরু করে পরবর্তী যুগের অগণিত মুহাদ্দিস রাসূলুলাহ (সাঃ)-এর নামে প্রচারিত সকল হাদীস সংকলন করে, গভীর নিরীক্ষা ও যাচাইয়ের মাধ্যমে সে সকল হাদীস ও রাবীদের বিষয়ে যে সকল মতামত প্রদান করেছেন লেখক মূলত সেগুলির উপরেই নির্ভর করেছেন এবং তাঁদের মতামতই উল্লেখ্য করা হয়েছে।



বইটি ডাউনলোড করুন (১.৯০ মেগাবাইট)